রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে সর্বস্বান্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকার, রাজনৈতিক সংগঠন, দাতা সংস্থা সহ সমাজের বিত্তবান ও সক্ষম মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর,সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি আজ শনিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ভষ্মিভূত এলাকা পরিদর্শনের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িদের মাঝে আর্থিক সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি মিলনায়তনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান প্রমূখ। অনুষ্ঠানে অগ্নিদূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জন ব্যবসায়িকে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রায় ছয় লাখ টাকা অনুদান হিসাবে বিতরণ করা হয়।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী, কল্যাণকামী, গণতান্ত্রিক ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক সংগঠন। গণমানুষের কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তাই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে আমরা আমাদের সাধ্যমত জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সে ধারাবাহিকতা আজ আমরা সীমিত সামর্থ নিয়ে আপনাদের দুঃখের ভাগীদার হওয়ার চেষ্টা করেছি। মূলত, যেকোন দুর্যোগকালীন মূহুর্তে জনগণের সকল সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় জনগণ রাষ্ট্রের সেবা থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই গণমানুষের যেকোন সমস্যার সমাধান ও আর্তমানবতার মুক্তির জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কুরআনের রাজ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতে পাতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, বান্দার ওপর কষ্ট আসে গোনাহ মাফের জন্য। আর এটি তকদিরের সাথে সম্পৃক্ত। মূলত, দুনিয়ার ক্ষতি বড় ক্ষতি নয়। আমাদেরকে অবশ্যই তকদিরে বিশ্বাস করতে হবে। আল্লাহর কাছ থেকে কোন পরীক্ষা আসলে সে পরীক্ষায় আমাদেরকে অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে। যেকোন অবস্থায় সবর এবং রিজিকে বরকতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। একই সাথে যথাযথভাবে নামাজ কায়েম, মানুষকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে। তাহলেই দেশে ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তিনি সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা প্রসঙ্গে বলেন, দেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত থাকলে যাকাত ভিত্তিক দুর্যোগ ফান্ড গঠন করা হতো। সে ফান্ড থেকেই ক্ষতিগ্রস্তরা প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতো। দেশে সরকারিভাবে রিলিফ ফান্ড থাকলেও তা দেশের মানুষের কল্যাণে তেমন কোন কাজে আসে না বরং লুটপাট ও চুরির মাধ্যমেই শেষ হয়ে যায়। তাই গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণের জন্য দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি সেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।