Saturday , 31 May 2025 | [bangla_date]
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি ও ব্যাবসায়
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আন্তর্জাতিক খবর
  6. আবহাওয়া
  7. উদ্দোক্তার গল্প
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরি
  10. জাতীয়
  11. তথ্য ও প্রযুক্তি
  12. তালতলী
  13. ধর্মীয়
  14. প্রতিক্রিয়া
  15. ফিচার

কেন উটের গোশত খেলে ওযু ভেঙে যায়?

ইসলাম ধর্মে পবিত্রতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সালাত আদায়, কুরআন তেলাওয়াত কিংবা স্পর্শ করার আগে ওযু বা অজু থাকা বাধ্যতামূলক। অনেকেই জানেন না, কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য গ্রহণের পরও ওযু পুনরায় করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—উটের গোশত খাওয়া।

এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে এসেছে পরিষ্কার ও স্পষ্ট নির্দেশনা।

সহীহ মুসলিম-এ জাবের ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,

তিনি বলেন, “নবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, ছাগলের গোশত খেয়ে কি ওযু করতে হবে?” তিনি বললেন, “চাও তো করতে পার।” আবার প্রশ্ন করা হল, “উটের গোশত খেয়ে কি ওযু করতে হবে?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ।”

তিনি আরও বলেছেন, “উটের গোশত খেলে তোমরা ওযু করো।” (মুসনাদ আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, সহীহুল জামে, হাদিস: ৩০০৬)

এই হাদীসগুলোতে নবী (সা.) যখন ছাগলের গোশতের ব্যাপারে ব্যক্তিগত ইচ্ছার স্বাধীনতা রাখছেন, কিন্তু উটের গোশতের ক্ষেত্রে নির্দেশ দিচ্ছেন, তখন এ থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়—উটের মাংস খাওয়া মাত্রই ওযু ভেঙে যাবে, এবং তা পুনরায় করতে হবে।

এটি কাঁচা, রাঁধা, লাল, সাদা—যেকোনো ধরনের উটের মাংস হোক না কেন, এমনকি কলিজা, হৃৎপিণ্ড, নাড়িভুঁড়ি, চর্বি, যে অংশই হোক না কেন—খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অজু ভেঙে যাবে।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.), ইবনে খুযাইমা, ইবনে মুনজির, ইমাম বায়হাকীসহ অনেক প্রখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস এ বিষয়ে একমত। এমনকি বহু সাহাবি থেকেও এ মতের পক্ষে বর্ণনা এসেছে।

তবে কেউ কেউ এর জওয়াব দিতে গিয়ে বলেন,

১. এসব হাদীস প্রাথমিক যুগের, পরবর্তীতে রহিত হয়েছে।

২. “ওযু” শব্দ দ্বারা শুধু মুখমণ্ডল ও হাত ধোয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।

কিন্তু নবী (সা.)-এর আরেকটি হাদীস পুরো বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে দেয়।

ইবনে মাজাহ-তে বর্ণিত,

তিনি বলেছেন: “উট শয়তান থেকে সৃষ্টি হয়েছে।”

আরও পড়ুনঃ  আত্মার পরিশুদ্ধি কেন প্রয়োজন

অন্য হাদীসে বলা হয়েছে:

“উটের পৃষ্ঠে শয়তান থাকে। তোমরা তাতে আরোহণ করার সময় বিসমিল্লাহ বলো।” (মুসনাদ আহমদ)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন,

উটের মাংস খেলে শরীরে শয়তানী প্রভাব তৈরি হয়, যা দূর করার জন্যই ওযুর নির্দেশ।

শাইখ উছায়মিন (রহ.) বলেছেন,

উটের গোশত খাওয়ার ফলে স্নায়ুবিক উত্তেজনা বেড়ে যায়, ওযু করলে তা কমে।

সুতরাং, হাদীস ও আলিমদের ব্যাখ্যা মিলিয়ে বোঝা যায়—উটের গোশত খাওয়ার পর ওযু ভঙ্গ হয়, এবং পুনরায় ওযু না করে সালাত আদায় বা কুরআন স্পর্শ করা যাবে না।

এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত। কেননা, রাসূল (সা.)-এর নির্দেশনা এক্ষেত্রে একদম স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন।

সূত্র: সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মাজমূ’ ফাতাওয়া, শারহুল মুমতে, ইলাউস সুনান।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

সর্বশেষ - মতামত

আপনার জন্য নির্বাচিত