অপরাধ

দুদকের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে লাখ লাখ টাকার প্রতারণা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, যাত্রাবাড়ী, মুগদা ও এয়ারপোর্ট এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে – দুদকের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নামে অভিযোগ নিষ্পত্তির আশ্বাসে ঘুষ হিসেবে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের চারজনকে গ্রেফার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো ১. মোঃ সেলিম ওরূফে তানভীর ইসলাম ওরূফে শফিকুর রহমান (৩৯) ২. মোঃ সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮) ৩. আব্দুল হাই সোহাগ (৩৮) ৪. মোঃ আজমীর হোসেন (৩৭)।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল, ১০টি সিম, বাংলা টিভি ৭১ -এর কর্ডলেস মাউথ পিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের ৭টি ভুয়া আইডি কার্ড, দুদক কর্তৃক বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের ১২টি প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা ৩টি নোটবুক জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার আ্যন্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আসামি সেলিম এক সময় রড মিস্ত্রির কাজ করে পরবর্তীতে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ছিল। বর্তমানে দুদকের প্রধান কার্যালয়, বিভিন্ন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নামে বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী, হিসাব রক্ষক, সার্ভেয়ারদেরকে মোবাইল ফোন দিয়ে ঈধষষ করে টাকা হাতিয়ে নেয়া-ই তার কাজ।

আসামি সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮) এক সময় ম্যানেজমেন্ট এবং ডিজে পার্টিতে কাজ করতো। সেই থেকে বিভিন্ন মেয়েছলে এবং দালালদের সাথে তার নানা রকম সখ্যতা গড়ে ওঠে। দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের নামে গঠন করা অভিযোগ, অভিযোগ থেকে দায় মুক্তি সংক্রান্ত চিঠি ডাউনলোড করে সে পাঠাতো প্রতারক সেলিমের কাছে। তাছাড়া টার্গেট করা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ/ চিঠি বানিয়ে সে দিত সেলিমকে। সেলিম এভাবে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বার গ্রেফতারকৃত প্রতারক আব্দুল হাই ও আজমির হোসেনকে দিয়ে সংগ্রহ করাতো। তারপরে দূদক‍‍` র কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালকদের নামে শুরু করে টাকা হাতিয়া নেয়ার নাটক।

আরও পড়ুনঃ  স্মার্টফোনে এসএসসির প্রশ্নোত্তর সরবরাহ, আটক ২

প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করতো বলে তারা ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো। এক্ষেত্রে তারা দুদক কার্যালয়ের সামনে অথবা সেগুনবাগিচাস্হ নাট্য মঞ্চ এলাকার আশপাশে টার্গেট ব্যক্তিদেরকে আসতে বলে ক্যাশ অথবা নগদ ফাইন্যান্সিয়াল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকাগুলো হাতিয়ে নিতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা (ঠরপঃরস) দের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে স্বীকার করেছে। মাদকাসক্ত এবং অসামাজিক কাজে অভ্যস্ত আসামিরা মুহূর্তেই টাকা খরচ করে নতুন প্রতারণায় হাত দিতো।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, কোন ব্যক্তি হঠাৎ করে সম্পদশালী হলে তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে দুদক বরাবর ভূয়া অভিযোগ তৈরি করে, অভিযোগ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের নিকট প্রেরন করে মোটা অংকের অর্থ দাবি ও আদায় করে ভূয়া তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে তাদেরকে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রেরণ করত।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button