বাংলাদেশ

সিগারেটের প্যাকেট বদলে না দেওয়ায় পুলিশের মারধর

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সিগারেটের প্যাকেট বদলে না দেওয়ায় এক দোকানদারকে বেদম মারপিটে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে চরভদ্রাসন থানার এসআই শিমন খানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করা হয়েছে।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে শিমনকে ক্লোজ করা হয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুর ১টার দিকে এসআই ইব্রাহিম ও সাব্বির নামে আরেক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা কার্যালয়ের সামনে রব মোল্লার (৩৫) দোকানে যান চরভদ্রাসন থানার এএসআই শিমন। এরপর রব মোল্লাকে দোকান থেকে মারতে মারতে বের করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে রবকে গারদে রেখে আরেক দফা মারধর করেন শিমন।

দোকনে যেয়ে রবকে মারধর ও থানায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজেও এর সত্যতা মিলেছে।

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রব মোল্লা বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে এএসআই শিমন আমার দোকান থেকে কুড়ি শলাকার এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট কেনেন। পরে এসে বলেন, দশ শলাকার দুটি ছোট বেনসন সিগারেটের প্যাকেট দিতে। কিন্তু দোকানে ছোট প্যাকেট না থাকায় সিগারেটের প্যাকেট বদলে দিতে পারিনি। এ সময় দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান এএসআই শিমন।

পরে বুধবার দুপুর ১টার দিকে এএসআই শিমন, এসআই ইব্রাহিম ও তাঁদের সঙ্গে থাকা সাব্বির নামে এক ব্যক্তি দোকানে এসে আমাকে মারতে মারতে দোকান থেকে বের করে চরভদ্রাসন থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে গারদে আটকে আমার ওপর অমানবিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। আমাকে রোলার ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। একপর্যায়ে আমার কাছ থেকে এএসআই শিমন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

রব মোল্লা বলেন, আমি উপজেলার সামনে ক্ষুদ্র একটি দোকান করি। আমিতো অবৈধ দোকান করিনা। কিন্তু তাঁদের দেখে মনে হলো- আমি অবৈধ কোন ব্যবসা করি। আমাকে থানায় নিয়ে থাপড়িয়েছে। বলেছে, চিনিস পুলিশ কী জিনিস।

প্রতিদিনই দোকানে যেয়ে কোন না কোন লোকের সঙ্গে তাঁরা দাপট দেখিয়ে ঝামেলা করে বলেও অভিযোগ করেন রব।

আরও পড়ুনঃ  পিকনিকে আর যাওয়া হলো না, ৭ জন চলে গেলেন না ফেরার দেশে

রবের স্ত্রী সাবিনা বেগম বলেন, দোকানের কর্মচারীর কল পেয়ে থানায় যেয়ে দেখি রবকে আলাদা একটা কক্ষে আটকে রাখছে। আমি থানায় যাওয়ার আগেই তাঁকে অনেক মারধর করছে। উনি (রব) চেয়ারে বসা ছিল, উঠতেও পারেনা এমনভাবে মারছে। সাধারণ একটা মানুষের সঙ্গে এমন করছে, আমরা এর বিচার চাই। অসহায় মানুষের সঙ্গে এরকম করবে কেন?

দোকানের কর্মচারী রাজু বলেন, এএসআই শিমন যখনই দোকানে আসেন আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ জানতে পেরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে এএসআই শিমনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *