রাঙামাটিতে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৫টি উপজেলা। এতে পানি বন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এরই মধ্যে বানের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। অন্যদিকে পাহাড় ধসও অব্যাহত রয়েছে। বিধস্ত হয়েছে চার শতাধিক বসতঘর। তাই বাধ্য হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হচ্ছেন দুর্যোগ দুর্গতরা। ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় কেন্দ্রে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে প্রশাসন। একই সাথে অব্যাহত রয়েছে সর্তকর্তা মাইকিং।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটিতে একদিকে পাহাড় ধস। অন্যদিকে বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। এ যেন মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাহাড়বাসির জন্য। এরই মধ্যে রাঙামাটি জেলার বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, রাজস্থলী ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় পানি বন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ। প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গত সাত দিনে টানা বর্ষণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক বসতঘর, ৬৮৩.৫ একর ফসলি জমি, ১৪টি ব্রিজ ও কালবার্ট ও ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি। সড়কের ৭৫টি স্থানে ধসসহ ৫টি হাট-বাজার তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। এছাড়া ৪৩টি পুকুরের মাছের ঘের বানের পানিতে ভেসে গেছে। পাহাড় ধস হয়েছে প্রায় ২০০টি স্থানে। তাই পাহাড় ধসে বিচ্ছিন্ন রয়েছে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-সাজেক-বাঘাইছড়ি, রাঙামাটি–কাপ্তাই-রাজস্থলী ও বান্দরবান সড়ক। তাই সাজেকে আটকা পড়েছে প্রায় ৩ শতাধিক পর্যটক।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তান বলেন, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বেশ কিছু ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা আছে। তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাণহানি এড়াতে সব ধরনের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাঘাইহাট সড়কে পানি উঠায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ৩ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছিল। বৃষ্টির কারণে মাটি পরিষ্কার করতে সময় লাগছে। এছাড়া সড়কে পানি থাকার কারণে যান চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। তবে পর্যটকরা নিরাপদে আছেন।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন প্রস্তুত। মাঠে কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দল। এছাড়া সামাজিক সংগঠনগুলো কাজ করছে। সড়ক সংষ্কার, বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ করছে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান। সীমান্ত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি বন্দীরা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। সতর্কতা মাইকিং অব্যাহত আছে।
2 Comments