খাবার নিয়ে আমরা যতটুকু সচেতন, তা কি যথেষ্ট?


সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও আগের তুলনায় স্বাস্থ্য সচেতনতায় মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। তদুপরি খাবারের ভেজাল বিষয়েও এখন মানুষ সচেতন। কিন্তু যেটুকু সচেতন, তা কি যথেষ্ট?
সম্প্রতি এক গবেষণায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন রাজধানীর বেশিরভাগ পথ বা হোটেলের খাবারেই বিভিন্ন ধরণের জীবাণু রয়েছে। তাই আমরা ব্যক্তিগতভাবে হাত পরিষ্কার করে খেলেও লাভ নাই। কারণ মানুষ এখন সবজি খেতে চায়, জরিপে ৪৫% মানুষই সপ্তাহে ৪ দিন সবজি খান, কিন্তু সবজি কি ভেজাল মুক্ত?
কর্মজীবীরা অফিসের কাজের ফাঁকে কিংবা শিক্ষার্থীরা ক্লাসের ফাঁকে বাইরের দোকানে চা পান করে থাকে। চায়ের সাথে অনেক সময় দোকানে পলিথিনের ভেতর ঝুলিয়ে রাখা বিস্কুট বা কেকও খায় অনেকে। পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে খুব কি সচেতন ক্রেতারা? দোকানী বা হোটেলের মালিকরা যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করেন বলে জানালেও গবেষকরা বলছেন, রাজধানী ঢাকার ৫৭ শতাংশ পথ-খাবারে নানা ধরণের জীবাণু রয়েছে। বিক্রেতাদের ৮৮ শতাংশের হাতেই থাকে নানান জীবাণু।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন একজন বিক্রেতা গড়ে প্রায় দেড়শো জনের কাছে পথ-খাবার বিক্রি করেন। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে চটপটি, ফুচকা, ঝালমুড়ি, পিঠা, রুটি পরোটা, শরবত, ডিমসেদ্ধসহ নানান খাবার। ঝালমুড়ি, ফুচকা, ভেলপুরীতে রয়েছে কৃত্রিম রং, ইস্ট, ই-কোলাই, কলিফর্ম, মাইকোটক্সিন, সালমোনেলার মতো শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সব উপাদান।
করণীয় কি?
যতটা সম্ভব বাইরের খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বাইরের মুখরোচক খাবার সম্পর্কে পুষ্টি বিজ্ঞানীরা জানান, বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনের বিষয়ে অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। তা না হলে আজকের শিশু দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই ঘরে তৈরি খাবারে শিশুদের অভ্যস্ত করতে হবে। কখনও জেনে, কখনও না জেনে আমরা অনিরাপদ খাবার খাচ্ছি। নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান দায়িত্ব।
সুস্বাস্থ্যের জন্য কেমিক্যালযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। সচেতনতার বিকল্প নেই। এক সময় পুষ্টি সম্পর্কে মানুষ ততটা সচেতন ছিল না। এখন গ্রামের মানুষও পুষ্টি সম্পর্কে জানে। সে ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে দেশের গণমাধ্যমগুলো আরও বেশি মানুষকে সচেতন করতে পারে।
স্বাস্থ্যই সুস্থতা, আর সুস্থ থাকার সহজ উপায় সচেতন থাকা, আমাদের সচেতন হবার চেষ্টা করতে হবে এবং অন্যদেরও স্বাস্থ্য সচেতনতায় উৎসাহিত করতে হবে।