ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে সরকার কোনো প্রতিকারই করতে পারেনি। এরপর আসল ডেঙ্গু। এর মূল দায়িত্ব হচ্ছে সিটি করপোরেশনের কিন্তু সেই সিটি করপোরেশনের মেয়ররা নানাবিধ কাজে বিদেশ ভ্রমণ করছেন। আর এদিকে ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে। এখানে তাদের কোনো খেয়াল নেই, পদক্ষেপ নেই।
সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে স্কাউট ভবন মার্কেটের সামনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জীবাণুনাশক স্প্রে ও সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে আমরা সবসময় দেখেছি যে, খরা, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে মানুষের কাছে শুধু খাদ্য নয়, ওষুধ নিয়ে ছুটে গেছে। শীতের সময় কম্বল নিয়ে ফাউন্ডেশনের কর্মীরা ছুটে গেছেন। করোনার সময়ও তারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দিয়েছেন। আজকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জীবাণুনাশক স্প্রে ও সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনা যতই ষড়যন্ত্র করুক, বিএনপি এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শকে কখনোই ধ্বংস করতে পারবে না বরং শেখ হাসিনা নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
জেডআরএফ’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফ’র ডা. এএইচএস হায়দার পারভেজ, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শফিউল আলম দিদার, কেএম সানোয়ার আলম, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাঈদ খান, শফিকুল ইসলাম, প্রকৌশলী মেহেদী হাসান সোহেল ও প্রকৌশলী এনামুল হাসান প্রমুখ।
কর্মসূচি উদ্বোধনের পর পাশের গলিতে মানুষের হাতে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে ও র্যালি করা হয়।
রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতির সঙ্গে সমাজসেবাকে সংযুক্ত করেছিলেন। আমি নিজে দেখেছি তাকে হাতে কোদাল নিয়ে খাল কাটতে, বৃক্ষ রোপণ করতে, পল্লিচিকিৎসক গঠন করে তৃণমূলে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে পৌঁছে দিতে। এটা শহীদ জিয়াউর রহমান করেছিলেন। এটা তার অনন্য সাধারণ এক কৃতিত্ব।
তিনি বলেন, আজকে এ ধরনের মানবসেবা ও মানবকল্যাণমূলক কাজ আমরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেখি না। রাষ্ট্রের যারা পরিচালক তারা অবৈধ এবং তাদের পরিচয়ই হচ্ছে তারা গুম খুনের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত করেছে। সুতরাং এরা তো কখনোই আর্ত মানুষের সেবায় কাজ করবে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে কীভাবে আবারও প্রশাসন সাজিয়ে একটা অবৈধ নির্বাচন করা যায়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ইতোমধ্যে দেখেছেন ঢাকা-১৭ আসনে তামাশার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে প্রহসনের নির্বাচন তারা করলেন। এতেই প্রমাণিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনার অধীনে কখনোই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। এটা একেবারে নিশ্চিত। আজকে ভোটের সুস্থতার জন্য শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা দরকার।
তিনি বলেন, প্রতিদিন আমরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা দেখছি। প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালে কত মানুষ যে মারা যাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই। আজকে যেসব মানুষের উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ নেই, নিম্ন মধ্যবিত্তরা যারা বস্তিতে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন। এদের পরিসংখ্যানও ঠিকমতো হাতে পৌঁছে না। এই রকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি যাচ্ছে একের পর এক।