রাজনীতি

‘বাবার কাঁধে প্রিয় সন্তানের লাশ’ এতো ভার কিভাবে সই : মায়া চৌধুরী

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া তার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরীর (দীপু) মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমার ছেলে অল্প বয়সে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। ‘বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ’ যে কতটা ভারী সেটা এ মুহূর্তে আমি ছাড়া অন্য কেউ বলতে পারবেনা। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাঁকে বেহেশত নসিব করেন এবং কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেন।

সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল সোয়া এগারোটার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রয়াত দীপুর জানাজা নামাজের আগে তিনি এসব কথা বলেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, আপনারা জানেন আমার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী (দীপু) আমাদের ছেড়ে এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। গত শনিবার বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। আমার ছেলে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। কর্মীদের সঙ্গে তার খুব সুন্দর সম্পর্ক ছিল। আজ আমার বড় ছেলে আমাদের মাঝে আর নেই। তিনি দুই ছেলে এক মেয়ে দুনিয়াতে রেখে গেছেন। আপনারা আমার দুই নাতির জন্য দোয়া করবেন।

সন্তানের জানাযায় সকলের কাছে সন্তানের জন্যে ক্ষমা চাইলেন মায়া চৌধুরী

তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে আমার ছেলে যদি কারো সাথে বেয়াদবি করে থাকে, কারো মনে যদি কোন কষ্ট দিয়ে থাকে, তাহলে আপনারা নিজগুণে তাকে ক্ষমা করে দেবেন। তার সাথে যদি কোন পাওনা থাকে তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি সাধ্যমতো সেগুলো পরিশোধ করার চেষ্টা করব।

দীপু চৌধুরীর লাশ নিয়ে সাধারণ জনতা ও পরিবারের জানাযার মাঠে অবস্থান।

এসময় তিনি জানাজার নামাজের সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জানাজার নামাজে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটির নেতাকর্মীরা। জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি এহসানুল হক জিলানী।

দীপু চৌধুরীর লাশ এর সম্মাননায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি এবং আওয়ামী নেতাকর্মীগণ।

পরে দীপুর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য নেতা এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন সাজেদুল হোসেন চৌধুরী (দীপু)। পরে শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আরও পড়ুনঃ  রাবার বুলেট-টিয়ারশেল নিক্ষেপ, থমথমে অবস্থা শাহবাগে
লাশবাহী গাড়ী থেকে জানাযার উদ্দেশ্যে লাশ নামাচ্ছেন মায়া চৌধুরীর প্রিয়জনরা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য গত ১৯ নভেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বাবার সঙ্গে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে দীপু মনোনয়ন পাননি, পেয়েছেন তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *