গোলাম রব্বানী ছোটন প্রতিপক্ষের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। অভিমানে তিনি সরে যাওয়ার পর নারী ফুটবলারদের নিয়ে অনেকে শঙ্কায় ছিলেন। প্রশ্নও উঠেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা আগের মতো শিরোপার উৎসবে মাতবে কি না? বিষয়টি স্বাভাবিক ছোটনের প্রশিক্ষণে জাতীয় ও বয়সভিত্তিক নারী দল অন্য উচ্চতায় অবস্থান করছে। যেখানে আন্তর্জাতিক আসরে পুরুষ ফুটবলাররা ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি। স্প্যানিশ হাভিয়ের কাবরেরা কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আশার আলো জ্বললেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের সাফল্য এনে দিতে পারেননি।
ছোটন বিদায়ের পর যে ভয়টা ছিল তা দূর করেছেন দেশের আরেক কোচ সাইফুল বারী টিটু। মেয়েদের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাফল্য অক্ষুণ রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। নারী জাতীয় দল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে তারই প্রশিক্ষণে। সাফ বয়সভিত্তিকেও সাফল্যের স্বাক্ষর রয়েছে তার। কিছুদিন আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রাউন্ড রবিন লিগে টানা তিন ম্যাচেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র ও টাইব্রেকারে উভয় দেশ ১১টি করে গোল করলে টুর্নামেন্ট কমিটি দুই দলকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে।
অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে যুগ্ম হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। এক মাস না পেরোতেই নেপালে আরেকবার শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ও ভারত। অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। কাঠমান্ডু আলফা কমপ্লেক্স মাঠে বিকাল ৩টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বাংলার মেয়েরা অপরাজিত থেকেই ভারতের বিপক্ষে লড়বে। রাউন্ড রবিন লিগে টানা তিন ম্যাচে সুরভীরা নেপাল ২-০, ভারত ৩-১ ও ভুটানকে ৬-০ গোলে পরাজিত করে। অন্যদিকে ভারত হারায় ভুটান ও নেপালকে।
বাংলার অপরাজিতা মেয়েরা জয়ের চাকা সচল রাখলেও ফাইনাল ফাইনালই। এখানে অন্য কোনো ম্যাচের সঙ্গে তুলনা চলে না। কাউকে ফেবারিট বলাটাও বোকামি। তাছাড়া ভারত অঘোষিত সেমিফাইনালে নেপালকে ১০ গোলে পরাজিত করে। তাই ফাইনালের আগে তারাও আত্মবিশ্বাসী।
কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলছি। মেয়েরা আস্থার প্রতিদান দিচ্ছে। ওদের পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়। ফাইনালের বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা। এখানে চাপ কাজ করে। ভারত অবশ্যই শক্তিশালী। তাদের রুখতে সেরাটাই দিতে হবে। আমার বিশ্বাস মেয়েরা তা পারবে। অভিজ্ঞ সংগঠক ম্যানেজারের দায়িত্ব নেওয়ার পর নারী দলের চেহারা বদলে গেছে। তিনি মেয়েদের উজ্জীবিত রাখতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না। মেয়েরাও বলছেন, আমরা যোগ্য অভিভাবক পেয়েছি। বাবু বলেন, ‘এখানে কোনো লুকোচুরি করব না। যেহেতু ফাইনালে আমাদের টার্গেট শিরোপা। অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস বলেন, ‘সেরা দুই দলের ফাইনালের লড়াই। চ্যাম্পিয়ন হতে হলে সেরাটা দিতেই হবে।’
রেনেসাঁ টাইমস/সিয়াম