তাদের এভাবে জানতে চাওয়ার কারণ সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও নানা সময় আরও কয়েকজন মন্ত্রীকেও একইভাবে দেশটির সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
ফলে নেতাকর্মীরা যখন নির্বাচন, দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা এসব বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তাদের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা যায়। এ অবস্থার জন্য সুবিধাবাদীদের দায়ী করে ক্ষোভও প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
গত রবিবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের সঙ্গে দেখা করে তার বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় ছাত্রলীগের সাবেক এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের। হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এসে তিনি জানতে চান, কি মনে হয় নির্বাচন হবে? আপনাদের কাছে কি তথ্য আছে? আওয়ামী লীগ কি আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে? এসব বিষয়ে নেতা কী বললেন? এক নাগাড়ে এসব প্রশ্ন করে কৌতূহলভরা চোখে তাকিয়ে থাকেন ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সাবেক ওই নেতা।
গত বুধবার রাতে বাংলামোটর এলাকায় চায়ের আড্ডায় উপস্থিত হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছিলেন ছাত্রনেতা। বিরোধী দলকে মোকাবিলায় সক্রিয় ছিলেন মাঠে। চা খেতে খেতে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, ‘সরকার থাকবে তো? ভোট করতে পারব আমরা?’ নিজের দলের বড় নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘সব খেয়ে ফেলেছে ওরা। খাওয়া পার্টির জন্যই আজ এ অবস্থা।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘নেত্রী কত কিছু করেছে, তাতে সাধারণ মানুষ আপাকে ভোট দেওয়াও দায়িত্ব মনে করে। কিন্তু সব খেয়ে ফেলা একটা গ্রুপ সেসব অর্জন শেষ করে দিচ্ছে।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের জানতে চাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের যেসব নেতাকর্মী দেখা করতে আসেন তাদের দিক থেকে এসব প্রশ্ন থাকে। আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যখনই নেতাকর্মী বেষ্টিত থাকেন অনেক ঘনিষ্ঠ কর্মী জানতে চান নানা কিছু।’
তিনি বলেন, কোনো কোনো বিদেশি শক্তির বেশি তৎপরতা বিষয়ে গণমাধ্যমের খবর মাঝেমধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়। ফারুক খান বলেন, ‘কূটনীতি কৌশলের খেলা। এগুলো সবাই পরিষ্কার দেখতে ও বুঝতে পায় না। কূটনীতি ঠুনকো কিছু নয়। সমালোচনায় সম্পর্ক উন্নতি-অবনতি হয়, এমন কিছুও নয়।’
ধানমণ্ডিতে দলীয় সভাপতির কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা-অফিসে দলীয় কাজ নিয়ে সারা দেশের নেতাকর্মীরা আসেন। তারা সুযোগ পেলেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে এবং আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে এমন নিশ্চয়তা পেতে চান দলের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাছ থেকে। সাংবাদিকদের পেলে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন, জানতে চান আমেরিকা কি ঠিক হবে না? সরকারের সঙ্গে থাকবে না?
সরকার কি নির্বাচন করতে পারবে? আবার কি ক্ষমতায় আসতে পারবে আওয়ামী লীগ? যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পরিবর্তন হবে, কখন হবে? দেশটিকে ‘ম্যানেজ’ করতে না পারলে, নির্বাচন কি ঠেকিয়ে দেবে তারা? আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে এসব প্রশ্ন। দলের কেন্দ্রীয় ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের কারও সঙ্গে দেখা হলেই এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চান কর্মীরা। কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হলেও এমন প্রশ্ন করেন মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
তাদের এভাবে জানতে চাওয়ার কারণ সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও নানা সময় আরও কয়েকজন মন্ত্রীকেও একইভাবে দেশটির সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
ফলে নেতাকর্মীরা যখন নির্বাচন, দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা এসব বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তাদের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা যায়। এ অবস্থার জন্য সুবিধাবাদীদের দায়ী করে ক্ষোভও প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
গত রবিবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের সঙ্গে দেখা করে তার বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় ছাত্রলীগের সাবেক এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের। হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এসে তিনি জানতে চান, কি মনে হয় নির্বাচন হবে? আপনাদের কাছে কি তথ্য আছে? আওয়ামী লীগ কি আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে? এসব বিষয়ে নেতা কী বললেন? এক নাগাড়ে এসব প্রশ্ন করে কৌতূহলভরা চোখে তাকিয়ে থাকেন ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সাবেক ওই নেতা।
গত বুধবার রাতে বাংলামোটর এলাকায় চায়ের আড্ডায় উপস্থিত হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছিলেন ছাত্রনেতা। বিরোধী দলকে মোকাবিলায় সক্রিয় ছিলেন মাঠে। চা খেতে খেতে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, ‘সরকার থাকবে তো? ভোট করতে পারব আমরা?’ নিজের দলের বড় নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘সব খেয়ে ফেলেছে ওরা। খাওয়া পার্টির জন্যই আজ এ অবস্থা।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘নেত্রী কত কিছু করেছে, তাতে সাধারণ মানুষ আপাকে ভোট দেওয়াও দায়িত্ব মনে করে। কিন্তু সব খেয়ে ফেলা একটা গ্রুপ সেসব অর্জন শেষ করে দিচ্ছে।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের জানতে চাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের যেসব নেতাকর্মী দেখা করতে আসেন তাদের দিক থেকে এসব প্রশ্ন থাকে। আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যখনই নেতাকর্মী বেষ্টিত থাকেন অনেক ঘনিষ্ঠ কর্মী জানতে চান নানা কিছু।’
তিনি বলেন, কোনো কোনো বিদেশি শক্তির বেশি তৎপরতা বিষয়ে গণমাধ্যমের খবর মাঝেমধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়। ফারুক খান বলেন, ‘কূটনীতি কৌশলের খেলা। এগুলো সবাই পরিষ্কার দেখতে ও বুঝতে পায় না। কূটনীতি ঠুনকো কিছু নয়। সমালোচনায় সম্পর্ক উন্নতি-অবনতি হয়, এমন কিছুও নয়।’
ধানমণ্ডিতে দলীয় সভাপতির কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা-অফিসে দলীয় কাজ নিয়ে সারা দেশের নেতাকর্মীরা আসেন। তারা সুযোগ পেলেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে এবং আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে এমন নিশ্চয়তা পেতে চান দলের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাছ থেকে। সাংবাদিকদের পেলে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন, জানতে চান আমেরিকা কি ঠিক হবে না? সরকারের সঙ্গে থাকবে না?
যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নিজ দলের নীতিনির্ধারক মহলের সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলেন, কী দরকার এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে সমালোচনা করার। সমালোচনা না করে সম্পর্কোন্নয়ন করা দরকার বলে তারা মনে করেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে এমন দুর্ভাবনা জেঁকে বসলেও কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রভাবশালী যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে কথা বলছেন না। বছরের শুরুর দিকে টানা সমালোচনা করলেও বেশ কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে সমালোচনা বন্ধ ছিল। গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটিকে নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। গত বুধবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের স্মরণসভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নাম উল্লেখ না করে পশ্চিমা দেশটিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ নীতির কড়া সমালোচনা করেন। সংসদে চলতি বছরের বাজেট অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে সরকারপ্রধান যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। এর আগেও তিনি সংসদের বাইরে সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা যত বাড়ে, সারা দেশের আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী, সমর্থকদের দুশ্চিন্তা ততই বাড়তে থাকে।
আসছে ডিসেম্বরের শেষের দিকে কিংবা জানুয়ারির প্রথম দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। তারা বরাবরই বলে আসছে বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে তারা। মে মাসের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে। এ ছাড়া ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও ঘন ঘন বৈঠক করে চলেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করছেন সরকারের মন্ত্রীরা।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুশ্চিন্তা বাড়ালেও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা তারা কিছুটা মেনে নিয়েছে। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ দলের অন্য কারও সমালোচনায় নেতাকর্মীরা ঠিক মানতে পারছেন না। তাদের দাবি, যাকে-তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা না করার নির্দেশনা দেওয়া উচিত।
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দলের সভাপতিসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। এবারও নির্বাচনের আগে দেশটির সমালোচনা শুরু হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সে সময়ের ঘটনার সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছেন।
তৃণমূল নেতাদের দুশ্চিন্তা নিয়ে জানতে চাইলে দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতি ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছে। নির্বাচন ইস্যুতে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। এতে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় সরকার ও দলের অবস্থান থেকে কিছু প্রতিক্রিয়া না দেখালে বিদেশি তৎপরতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ফলে সমালোচনা রাজনৈতিক কৌশলের অংশ বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় এই নেতারা।
তারা আরও বলেন, প্রকাশ্য তৎপরতা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। এতে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে, সমালোচনা না করলে ভালো হয়ে যাবে, ব্যাপারটা তেমন নয়।
কেন্দ্রীয় ওই নেতারা বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বশেষ দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সবাইকে অবহিত করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দলকে ক্ষমতায় বসাবে না। দেশটির লক্ষ্য হলো প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে সরানো। ফলে নেতাকর্মীদের বোঝা উচিত, সমালোচনা কেন?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান হলো বিতর্কমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সেজন্য দলের শক্তির ওপর বেশি নির্ভর করে আছেন তিনি। লক্ষ্য যেহেতু নির্ধারণ করাই আছে, তাই কৌশলী অবস্থানে থেকে কূটনীতি-রাজনীতি মোকাবিলা করতে সমালোচনার পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবারও চলছে।
দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করায় দেশের রাজনীতিতে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী একটি অংশের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশংসা পেয়েছেন। সাধারণ মানুষের একটি অংশের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে শেখ হাসিনার সমালোচনামূলক বক্তব্য সমর্থন পেয়েছে। তিনি বলেন, সব কথার শেষ কথা হলো আলোচনা-সমালোচনায় কূটনৈতিক সম্পর্কের ভালো-খারাপ নির্ধারণ হয় না।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা যুক্তরাষ্ট্রের এমন তৎপরতাকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না। যুক্তরাষ্ট্রের এমন তৎপরতাকে হস্তক্ষেপ মনে করেন সরকারের মন্ত্রী ও দলের নেতারা। তারা দাবি করেন, এই হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে খোলামেলা সমালোচনা করা বিদেশিদের এক ধরনের চাপ দেওয়া।
তারা বলছেন, কূটনীতির অনেক কিছু দৃশ্যমান হয়ে উঠে না। ফলে সম্পর্ক খারাপ বা ভালো সেটা সব মহলের বোঝার উপায়ও থাকে না। কূটনীতিক দেনদরবার কৌশলের বিষয়। তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা থাকবে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে দলের নীতিনির্ধারকদের প্রতি তাদের বিশ্বাসও আছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে দলের নেতাকর্মীরা একটু চাপে থাকেন। এটা নেতাকর্মীদের দলের জন্য ভালোবাসার প্রকাশ। সবকিছু ঠিক থাকলেও তবু সম্ভাবনার কথা জানতে চান। আমাদের কাছেও অনেকেই নিশ্চয়তা চান, জানতে চান দলের ও সরকারের অবস্থা মজবুত রয়েছে কি না।’
দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলের দাবি আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও অঙ্গীকার সুষ্ঠু নির্বাচন। ফলে জল ঘোলা কে বা কারা করতে চায়, এজন্য গভীরে যাওয়া উচিত।’