চট্টগ্রাম

ট্রলি ব্যাগে টুকরো মরদেহটি হাসানের, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্ত্রী-সন্তার গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম নগরীতে ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া শরীরের আট টুকরো করা মরদেহটি মো. হাসান (৬২) নামে এক ব্যক্তির। উদ্ধার হওয়া বিচ্ছিন্ন আঙুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোড এলাকায় একটি বস্তা থেকে হাসানের শরীরের বাকি অংশও উদ্ধার করা হয়। তবে এখনও পাওয়া যায়নি মাথার অংশ।

এদিকে এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে নিহতের স্ত্রী সানোয়ারা বেগম ও ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। ছোট ছেলে ও তার স্ত্রীকে ধরতে অভিযান চালছে বলে জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হাসানের দেহের খণ্ডিত অংশ বস্তায় ভরে আকমল আলী সড়কের খালে ফেলা হচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে পতেঙ্গা এলাকায় ট্রলি ব্যাগে হাসানের আট টুকরো মরদেহ পাওয়া যায়।

নিহত মো. হাসান চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে।

পিবিআইয়ের সংগ্রহ করা তার জাতীয় পরিচয়পত্রে অস্থায়ী ঠিকানা লেখা আছে, সিলেট সদরের সাধুর বাজারসংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।

পিআইবি সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহ ও সম্পত্তির জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খালে বস্তা পড়ে থাকার খবর পেয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয় পিবিআই। এ সময় খাল থেকে উদ্ধার করা বস্তায় ওই হাসানের শরীরের বুকের অংশ পাওয়া যায়।

পিবিআই আরও জানায়, হাসান গত ৩০ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে ছিল না কোনো যোগাযোগ। এক বছর আগে তিনি হঠাৎ ফিরে এলে সম্পত্তি নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে নিজের বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ছেলেরা। ছোট সন্তানের বাসায় বাবা হাসানকে হত্যা করে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে টুকরা করা হয়।

প্রথমে, বৃহস্পতিবার রাতে পতেঙ্গা এলাকায় ট্রলি ব্যাগে আট টুকরো পাওয়া যায়। শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয় বুকের অংশ। এখনও মাথার অংশ পাওয়া যায়নি বলে জানায় পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান বলেন, প্রায় ২৭ বছর ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিখোঁজ অবস্থায় ছিলেন মো. হাসান । সম্প্রতি পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। নিজের নামে থাকা কিছু সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য হাসানকে চাপ দিয়েছিলেন স্ত্রী-সন্তানরা। রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্ত্রী-সন্তানরা ঠাণ্ডা মাথায় তাকে খুন করেন। মরদেহ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেন, যেন হত্যাকাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ গোপন থাকে।

আরও পড়ুনঃ  চট্টগ্রামে জলাবদ্ধ সড়কে ডুবে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু

পিবিআইয়ের সহকারী পুলিশ সুপার এ কে এম মহিউদ্দীন জানান, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে হাসানের ছোট সন্তান একটি বস্তা নিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। বস্তাটি আকমল আলী সড়কের খালে ফেলতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। এরপর থেকেই আমাদের সন্দেহ হয়। এছাড়া অন্য আরেকটি ফুটেজে, ছোট ছেলের বাসা থেকে তার মা সানোয়ারা বেগমকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় চলে যেতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে ট্রলি ব্যাগ ভর্তি অবস্থায় হাসানের দেহের আট টুকরো অংশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে দুই হাত এবং দুই পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত ছিলো।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button