ক্রিকেটবাংলাদেশ

আশা জাগিয়েও হার, যা বললেন ট্র্যাজিক হিরো জাকের

ভিনি, ভিসি, ভিডি। এলেন, দেখলেন, জিতলেন। জাকের আলি অভিষেক ম্যাচে ৩৪ বলে ৬৮ রানের ভিনগ্রহের ইনিংস খেললেন। তার এ টর্নেডো ইনিংসে জেতেনি বাংলাদেশ, কিন্তু ‘লোকাল হিরো’ জাকের জিতে নেন গোটা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মন। জাতীয় দলে পাকাপোক্ত করে নেন নিজের জায়গা। জাকেরের ভিনগ্রহের ইনিংস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের পরও বাংলাদেশ ৩ রানে হেরেছে।

আশা জাগিয়েও শেষে হেরে যাওয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন ট্র্যাজিক হিরো জাকের। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বারবার একটি কথাই বললেন, জিততে পারলো ভালো লাগতো। জাকের আলি অনিক যে অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পারলেন না। তার দুইশ স্ট্রাইকরেটে ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংসটা গেলো বিফলে।

জাকের জানান, ‘রিশাদকে বলেছিলাম জাস্ট চেষ্টা করে আমাকে স্ট্রাইক দেওয়ার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওর উইকেটটা পড়ে যায়। আমি তো তারপরও স্ট্রাইকে ছিলাম, যখন ৪ বলে ১০ রান লাগতো। কনফিডেন্স ছিল ইনশাআল্লাহ পারব। যেহেতু পুরো ইনিংসটা ভালো যাচ্ছিল। কানেক্ট হয়নি, হাতে চলে গেছে, এই আর কী!’
আক্ষেপ নিয়ে এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘যদি ম্যাচ জিততে পারতাম, তাহলে ১০-১২ রান করলেও বেশি খুশি লাগত। ভালো খেলেছি আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা যা দিয়েছেন। তবে ম্যাচ জেতাতে পারলে হয়ত আরও বেশি খুশি হতাম।’

এদিন শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেটে ২০৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত লড়াই করে সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ২০৩ রান। ২০০-ঊর্ধ্ব ইনিংস (২১৫) রান তাড়া করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৮ সালে কলম্বোয় নিদাহাস ট্রফিতে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে ২১৪ রান তাড়া করে ৫ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। গতকার সেই সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ ও জাকের। দুজনের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে টানটান উত্তেজনার ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে নাজমুল বাহিনী। বর্ষীয়ান মাহমুদুল্লাহ ৫৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে পাইপলাইনে তুলে দেন। বর্ষীয়ান ক্রিকেটারের ৩১ বলের ইনংসটিতে ছিল ২টি চার ও ৪টি ছক্কা। জাকের ২০০ স্ট্রাইকরেটে ৩৪ বলে ৬৮ রানের ‘রকস্টার’ ইনিংস খেলেন ৪ চার ও ৬ ছক্কায়। অন্য ব্যাটাররা একটু আক্রমণাত্মক মেজাজি হলে হয়তো জয়োচ্ছ্বাসে ভাসত টাইগাররা।

আরও পড়ুনঃ  সুযোগ পেলেই মেয়েকে ধ'র্ষ'ণ করতেন বাবা

শ্রীলঙ্কা ইনিংসের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন বাঁ হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। সফরকারীদের ইনিংসে সাফল্য বলতে ওইটুকুই! যদিও উইকেটের পতন হয়েছে ৩টি। কিন্তু ২০ ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২০৬ রান। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বীপরাষ্ট্রের তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে আরও দুবার ২০০-ঊর্ধ্ব স্কোর করেছে শ্রীলঙ্কা। ২০১৮ সালের মার্চে নিদাহাস ট্রফিতে ৬ উইকেটে ২১৪ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। অবিশ্বাস্য হলেও ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। কলম্বোর ওই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ প্রথমবার ২০০-ঊর্ধ্ব স্কোর তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছিল। একই বছর ফেব্রুয়ারিতে সিলেটে ৪ উইকেটে ২১০ রান করেছিল। ম্যাচটি হেরেছিল টাইগাররা। ছয় বছর পর সেই সিলেটে টস হেরে ফের ২০০-ঊর্ধ্ব স্কোর করেছে শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৬ রান করে।

আশ্চর্য হলেও সত্যি, প্রথম ১০ ওভারে যেখানে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৭৯ রান, সেখানে শেষ ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ১২৭ রান। যার ৬৪ রান নেয় শেষ ৪ ওভারে! অবিশ্বাস্য! সফরকারী ব্যাটারদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে টাইগার বোলাররা অতিরিক্ত দিয়েছেন ১৯ রান। অবশ্য ২০১৩ সালে দ্বীপরাষ্ট্রের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রান দিয়েছিল অতিরিক্ত খাতে। সফরকারীদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস খেলেন সামারাবিক্রমা। ৪৮ বলের অপরাজিত ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছক্কা। এ ছাড়া কুশল মেন্ডিস ৫৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ৩৬ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। টাইগারদের পক্ষে ১টি করে উইকেট নেন শরিফুল, তাসকিন ও রিশাদ। লঙ্কান ব্যাটাররা ইনিংসটিতে ছক্কা হাঁকান ১১টি। চারিথ আশালাঙ্কা শেষ দিকে টর্নেডো গতিতে ব্যাটিং করেন। ২১ বলে ৪৪ রান করেন ৬ ছক্কায়।

রেনেসাঁ টাইমস/সিয়াম

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *