২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। এরপর ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহে করে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ পশ্চিমাদেশগুলো। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি অংশ নেওয়ার বিষয়টি তারা সব সময় অস্বীকার করে আসছিল।
কিন্তু ৩৮ মিনিটের একটি ফোনালাপ ফাঁসে বিপাকে পড়েছে ব্রিটেন। জার্মানির বিমান বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কথোপকথনের সেই অডিও সম্প্রতি ফাঁস করে দিয়েছেন এক রুশ সংবাদ চ্যানেলের সম্পাদক। ওই অডিও প্রকাশ্যে আসার পর জানা গেছে, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীকে সাহায্যে করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। এই তথ্য সামনে আসার পরই পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর দিকে ফের আঙুল তুলছে মস্কো। গোটা ঘটনায় বিব্রত জার্মান সরকার।
জার্মান বিমান বাহিনীর সদস্যদের ওই ফোনালাপ ‘ওয়েবেক্স’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মে প্রথমে ফাঁস হয়। রাশিয়ার গোয়েন্দারা ওই অডিও হ্যাক করেন এবং পরে তা টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ্যে আনেন রুশ চ্যানেলের ওই সম্পাদক। তবে ওই কথোপকথন যে তাদেরই বিমান বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে হয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছে জার্মান সরকার। ওই বার্তায় এক বিমান বাহিনীর অফিসারকে বলতে শোনা গেছে, রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ রক্ষাকারী কার্চ সেতুকে যখন ইউক্রেনীয় বাহিনী নিশানা করেছিল, তখন ইউক্রেনকে ‘স্টর্ম শ্যাডো’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সাহায্য করেছিলেন ব্রিটিশ সেনারা।
জার্মান বিমান বাহিনী অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনগো গেরহার্ৎজ তারই এক সহকর্মীর সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সামরিক কৌশল নিয়ে ফোনে আলোচনা করছিলেন। তাকে বলতে শোনা যায়, কীভাবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রত্যক্ষভাবে ইউক্রেনের বাহিনীকে সাহায্য করে আসছে। ফ্রান্সের সেনাবাহিনী যে প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে কিয়েভকে সাহায্য করছে না, সে কথাও সহকর্মীকে ফোনে বলেন ওই অফিসার।
ব্রিটিশ সরকার বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি। তবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দাবি, এই কথোপকথন থেকেই স্পষ্ট যে কীভাবে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো একজোট হয়ে তাদের পরাস্ত করার চেষ্টা করছে।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে, দ্য গার্ডিয়ান
রেনেসাঁ টাইমস/সিয়াম