চাটখিল, নোয়াখালী – কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারি ম্যান মো. ইমতিয়াজ হোসেন রিয়াজ গত ৫ আগস্ট থানা লুটের ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। পরিবার দাবি করছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তার শহীদের স্বীকৃতি চায়।
থানা লুটের ঘটনা
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের গুজবের পর সেদিন চাটখিল থানায় উত্তেজিত জনতা হামলা চালায়। পুলিশ প্রাণরক্ষার্থে স্থান ত্যাগ করলে দুর্বৃত্তরা থানায় আগুন দেয় এবং অস্ত্র লুট করে। লুট করা অস্ত্র থেকেই গুলিবিদ্ধ হন ইমতিয়াজ।
পরিবারের অভিযোগ
ইমতিয়াজের বাবা হাবিবুর রহমান দাবি করেছেন, তার ছেলে থানার অস্ত্র নিয়ে পালানোর সময় নয়, বরং অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। তিনি বলেন, “আমার ছেলের পেটে গুলি লেগেছে। যদি সে থানার অস্ত্র নিয়ে পালাত, তাহলে পায়ে বা মাথায় গুলি লাগত। এটা স্পষ্ট যে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি তার হত্যার বিচার চাই এবং শহীদের স্বীকৃতি দাবি করছি।”
প্রশাসনের বক্তব্য
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, “উত্তেজিত জনতার আক্রমণের সময় পুলিশ নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এক ব্যক্তির আহত হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি, তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।”
চাটখিল উপজেলার ইউএনও শেখ এহসান উদ্দীন জানান, ইমতিয়াজের পরিবার শহীদের স্বীকৃতি দাবি করলেও যাচাই-বাছাইয়ের পর তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “শহীদ স্বীকৃতি পাওয়ার মানদণ্ডে ইমতিয়াজের নাম উঠে আসেনি।”
অমীমাংসিত প্রশ্ন
ইমতিয়াজের প্রতিবেশী আরমান বলেন, “আমরা শুনেছি, লুট করা অস্ত্রের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এখন পরিবার বলছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নানা মত রয়েছে।”
ইমতিয়াজের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এবং শহীদ স্বীকৃতির প্রশ্ন নিয়ে প্রশাসন ও পরিবারের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েই গেছে। তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের দাবি উঠেছে।