বাংলাদেশের শহর থেকে গ্রামে, আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পরেছে নকল ওষুধ, যা নিয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা করছেন চিকিৎসকরা। কিছু কিছু জরুরি ওষুধের ও ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। নজরদারি না থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে ওষুধগুলো পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকার অলিগলির ফার্মেসি থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত।
তেমনই একটি ওষুধের নাম ‘অ্যালবুমিন ইঞ্জেকশন’। এটি মূলত বড় ধরনের অস্ত্রপচার বা গুরুতর আঘাত পরবর্তী চিকিৎসায় রক্তে প্লাজমার পরিমাণ বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।কিন্তু জরুরি এই ওষুধটির নকল ও ভেজালে এখন বাজার সয়লাব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ বলছেন, বাজারে এর নকল এতটাই বেড়ে গেছে যে, আমরা এটা দেওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছি।
মূলতঃ অ্যালবুমিন ব্যবহারের পর রোগীর মৃত্যু ও শারীরিক জটিলতা দেখা গেলে পরিক্ষাগারে পাঠানো হয় ইঞ্জেকশন টি। এরপরেই রিপোর্টে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাংলাদেশে যেসব ওষুধের নকল তৈরি হচ্ছে, সেগুলোতে উপাদান হিসেবে আটা-ময়দা, এমনকি সুজি ব্যবহার করার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা।
বিজ্ঞানবিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ঢাকা শহরে বিক্রি হওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ ওষুধই নকল, ভেজাল এবং নিম্নমানের।
২০২৪ সালের মার্চে ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে আটা, ময়দা এবং সুজি ব্যবহার করে নকল ওষুধ উৎপাদনকারী একটি দলের পাঁচজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ।নকল ও ভেজাল ওষুধ ঠেকাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে ২০২৩ সালে ওষুধ ও কসমেটিক আইন পাস করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা নকল ওষুধের উৎপাদন। আইন থাকলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।